তানোর প্রতিনিধি : আগামী ১১ নভেম্বর আসন্ন রাজশাহীর তানোর উপজেলার সাত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নৌকা ডুবাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন উপজেলা আ”লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলে অভিযোগ উঠেছে। কারন তারা নৌকা ডুবাতে বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়েছেন।তারা বিদ্রোহী প্রার্থীদের কে ভোট করতে বাধা প্রদান করার কথা থাকলেও তাদের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র । কিন্তু বিদ্রোহীদের বসিয়ে না দিয়ে দলের শীর্ষ পদে থেকে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এতে করে উপজেলা জুড়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়, সেই সাথে দলীয় নেতাকর্মীরা ফুঁসে উঠেছে তাদের এমন কর্মকাণ্ডে।এমনকি সভাপতি সম্পাদকের এমন অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য বহিষ্কারেরও দাবি তুলেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তাদের জন্যই তৃণমূলে দেখা দিয়েছে চরম বিভক্ত, সেই সাথে বেড়েছে অন্তর কলহ।
জানা গেছে,আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনায়নের জন্য সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের কোন অনুসারিরা নৌকা প্রতীক পাননি। নির্বাচনের আগেই তারা ঘোষণা দিয়েছিল আমরা যাকে ইউপিতে প্রার্থী দেব সেই বিজয়ী হবে। কোন প্রতীক লাগবেনা, আমাদের জনপ্রিয়তায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে। মুলত এজন্যই তারা বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়েছেন বলে মনে করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
অথচ গত মাসের শেষের দিকে তানোর পৌর আ”লীগের বর্ধিত সভায় স্থানীয় সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী অনুরোধ করে বলেছিলেন যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন দয়া করে আপনারা মনোনায়ন প্রত্যাহার করে নৌকার পক্ষে কাজ করতে আহবান জানান এবং যারা নৌকা পেয়েছেন তাদেরকে বলেন আপনারা বারবার বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছে গিয়ে তাদের অনুরোধ করে বলেন তারা যেন নৌকার পক্ষে থাকেন। কারন নৌকা প্রতীক দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, তিনিই একমাত্র নৌকা দেওয়ার মালিক।তাই বিদ্রোহ না করে পক্ষে থাকায় ভালো।
এদিকে বাধাইড় ইউপিতে নৌকা ডুবাতে রাব্বানী, মামুন রফিক নামের এক ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাড় করিয়েছেন। যাকে ইউনিয়ন বাসিই ভালো ভাবে চেনেন না। তার প্রতীক মটরসাইকেল। এই ইউপিতে নৌকা প্রতীকে ভোট করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ইউপি আ”লীগের সাধারন সম্পাদক আতাউর রহমান। অপর জন সাবেক চেয়ারম্যান ইউপি বিএনপির সাবেক সহসভাপতি কামরুজ্জামান হেনা। তার প্রতীক আনারস। ওই ইউপির আ”লীগের একাধিক নেতারা জানান রফিকুল কে নৌকা প্রতীক দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নৌকা না পেয়ে এবং তার টাকা হালাল করতেই তাকে বিদ্রোহী প্রার্থী করা হয়েছে।
পাঁচন্দর ইউপিতে নৌকা ফুটো করতে সভাপতি রাব্বানী তার আপন ছোট ভাই শরিফুল কে বিদ্রোহী প্রার্থী করেছেন। তাকে বিগত ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা ফুটো করতে ভাইকে ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে ভোট করিয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে শরিফুল পারাজিত হয়েছিল। আর ভোটের যাবতীয় সবকিছুই করেছিলেন গোলাম রাব্বানী ও মামুন। তাকে ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে পুনরায় আ”লীগে যোগদান করান রাব্বানী। এবার ইউপি ভোটেও ভাইকে ভোট করতে নামিয়েছেন।শরিফুল মটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ইউপি ভোট করছেন।
কামারগাঁ ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন নৌকা না পেয়ে তাকে বিদ্রোহী প্রার্থী করেছেন রাব্বানী মামুন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন। এই মোসলেম রাব্বানী মামুনের বা সেভেন স্টারের অন্যতম অর্থদাতা। মনোনায়নের নামে তার কাছ থেকেও বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন রাব্বনী মামুন বলেও ভোটের মাঠে প্রচার রয়েছে।
চান্দুড়িয়া ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন জেলা পরিষদের সদস্য উপজেলা আ”লীগ নেতা আব্দুস সালাম। তিনি মটরসাইকেল প্রতীকে ভোট করছেন। এছাড়াও কলমা ও তালন্দ ইউপিতেও রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থী।
আ”লীগের সিনিয়র নেতারা জানান, যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বসিয়ে দেওয়ার মুল দায়িত্ব উপজেলা আ”লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের। কিন্তু তারা সেটা না করে নৌকার সাথে বেইমানী করছেন। তাদের মত নেতাদের আস্থাকুড়ে ফেলা উচিৎ। আবার এই রাব্বানী এমপি মনোনায়ন পাওয়ার জন্য দিবা স্বপ্ন দেখছেন। নৌকা ডুবাতে যে মরিয়া সে কিভাবে নৌকার এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তারা কোন সুযোগ সুবিধা না পেয়ে দলের মধ্যে ভাঙ্গন ধরাতে মরিয়া। এদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় পরিষ্কার ভাবে বলছেন আ”লীগে লবিং গ্রুপিংয়ের মুলেই সভাপতি সম্পাদক। আরে নৌকা দেয় প্রধানমন্ত্রী নৌকা ফারুক চৌধুরী দেওয়ার মালিক না। আপনারা নৌকার বিরোধিতা করছেন না প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিরোধিতা করছেন। এর কঠোর জবাব দিবে দলের নেতাকর্মীরা।
Leave a Reply